শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মাদ রাহাতুল ইসলাম:
মানুষের মূলই তো হলো তার অন্তর। তার হৃদয়। যার অন্তর পরিশুদ্ধ সে একজন পরিশুদ্ধ মানুষ। ভালো মানুষ। অধিকাংশ মানুষই মন্দ কাজ ও মন্দ ভাবনার মাধ্যমে তার অন্তরকে কলুষিত করে ফেলে। কোনো মানুষ খারাপ হওয়ার আগে তার হৃদয় নি®প্রভ হয়ে যায়। অর্থাৎ স্বভাবজাত চাহিদা অনুযায়ী তার অন্তর ভালো কিছু গ্রহণ করতে পারে না।
হজরত নোমান ইবনু বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে, জেনে রাখো, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরা আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখো, সে গোশতের টুকরোটি হলো কলব (অন্তর )। -সহিহ বোখারি : ৫২
আল্লাহ মাফ করুন, কারও তো এমন খারাপ অবস্থা হয়- তার কোনো ভালো কাজ ভালো লাগে না। ভালো কথা ভালো লাগে না। সে সর্বদা মন্দ বিষয়ে মগ্ন থাকে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এটা কখনো নয়, বরং তাদের অন্তরের ওপর (গোনাহের) মরিচা লেগে গেছে, যা তারা প্রতিনিয়ত উপার্জন করেছে।’-সুরা মুতাফফিফিন : ১৪
আর মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো- অপরিশুদ্ধ অন্তর। যার লালসা ও চাহিদা মেটাতে গিয়ে মানুষ নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। যার দরুন দুনিয়াতেও অসম্মানী হয় আর আখেরাতে ভোগ করতে হয় কঠিন শাস্তি। কারণ অপরিশুদ্ধ হৃদয়ের কাজ হলো- মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করা। খারাপ কাজ করানো। আল্লাহতায়ালা মানুষের অন্তরকে নির্মল ও সতেজ করে সৃষ্টি করেছেন। এবং সঙ্গে সঙ্গে অন্তরকে সবরকম মলিনতা ও কলুষমুক্ত রাখতে আদেশ করছেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্তুতি কোনো কাজে আসবে না, সেদিন উপকৃত হবে কেবলমাত্র সে, যে আল্লাহর কাছে আসবে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে।’ -সুরা শুয়ারা : ৮৮-৮৯
হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলা হলো, কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি বলেন, প্রত্যেক বিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী সত্যভাষী ব্যক্তি। তারা বলেন, সত্যভাষীকে তো আমরা চিনি, কিন্তু বিশুদ্ধ অন্তরের ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, সে হলো পূত-পবিত্র নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ যার কোনো গোনাহ নেই, নেই কোনো দুশমনি, হিংসা-বিদ্বেষ, আত্মঅহমিকা ও কপটতা। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪২১৬
অন্তরের অপরিশুদ্ধতাই সব সমস্যার মূল। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) এই দোয়া করতেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি অনুপকারী বিদ্যা থেকে; এমন অন্তর থেকে, যে ভয় করে না; এমন দোয়া থেকে যা কবুল হয় না; আর ওই প্রবৃত্তি থেকে, যা তৃপ্ত হয় না। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আমি এই চারটি বস্তু থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। -সুনানে নাসায়ি : ৫৪৭০
ভয়েস/আআ